অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েলে জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এটি ছিল গত চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে সেখানকার পঞ্চম নির্বাচন। বুথফেরত জরিপ বলছে, নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি মোটেও ভালো খবর নয়। কারণ উগ্র ডানপন্থি ও ফিলিস্তিনবিদ্বেষীদের সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতায় ফিরছেন এ ইসরায়েলি নেতা।
বুধবার (২ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ১২০ আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে জিততে চলেছে নেতানিয়াহুর জোট। লিকুদ পার্টির নির্বাচনী সদর দপ্তরে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা অনেক বড় জয়ের দ্বারপ্রান্তে।
তবে দেড় বছরের মতো ক্ষমতার বাইরে থাকা এ নেতা জানিয়েছেন, তিনি চূড়ান্ত ভোটগণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভোটগণনা শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লিকুদ পার্টির নেতা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী। টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড রয়েছে তার। কিন্তু ২০২১ সালের জুনে মধ্যপন্থি নেতা ইয়াইর লাপিদের জোট পার্লামেন্টে কোনোমতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে নেতানিয়াহুর নিরবচ্ছিন্ন শাসনের অবসান ঘটে।
তবে ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকেই লাপিদের উদারপন্থি, ডানপন্থি এবং আরব দলগুলোর সমন্বয়ে গড়া জোটের ভঙ্গুর দশা ক্রমেই স্পষ্ট হতে থাকে। মঙ্গলবারের বুথফেরত জরিপ বলছে, এবারের নির্বাচনে তারা নেসেটে ৫৩-৫৪টি আসন পেতে পারে, যা নেতানিয়াহুর জোটের চেয়ে অনেক কম।
নির্বাচনে জিততে নেতানিয়াহু এবার নির্ভর করছেন তীব্র ফিলিস্তিনবিদ্বেষী, ইহুদি জাতীয়তাবাদের সমর্থক, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী নেতা ইতামার বেন-জিভির এবং উগ্র ডানপন্থি নেতা বেজালেল স্মোট্রিচের ওপর।
কিন্তু নেতানিয়াহু বেন-জিভিরকে নিয়ে সরকার গঠন করার সম্ভাবনা ফিলিস্তিন তো বটেই, যুক্তরাষ্ট্রকেও দুশ্চিন্তায় ফেলেছ। কারণ, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসের তালিকায় থাকা কাচ গোষ্ঠীর সাবেক সদস্য এই বেন-জিভির। সংঘাতে উসকানি ও বর্ণবাদী বক্তব্যের জন্য কুখ্যাতি রয়েছে তার।
আনোয়ার গজল নামে এক পর্যবেক্ষক কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলে উগ্রপন্থা বাড়ছে। এটি আরবদের জন্য বিপজ্জনক। নেতানিয়াহুও সমান বিপজ্জনক। অবস্থা ভালো নয়। এটি ভয়ানক।
টিভি স্ক্রিনে বেন-জিভিরের সমর্থকদের নাচের দিকে তাকিয়ে ৩০ বছর বয়সী ইহাব আবুকরুবিয়া বলেন, আমি এমনটাই ধারণা করেছিলাম। আমার মনে হয়, এখানকার অধিকাংশ ইহুদি উগ্র ডানপন্থি। এ জন্যই আমরা লিকুদ পার্টি এবং বেন-জিভিরকে এত আসন পেতে দেখছি।
বেন-জিভির ক্ষমতায় গেলে যেসব পরিবর্তন আনবেন, তা নিয়ে ভয় শুধু ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই নয়, ইসরায়েলিদের ভেতরও দেখা যাচ্ছে।
ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ইয়োহানান প্লেসনার বলেন, আমরা যে ফলাফল দেখতে পাচ্ছি, তা যদি সত্য হয়, তাহলে পরবর্তী সরকার গঠন করবে এমন একটি জোট, যারা ধারাবাহিক সংস্কারের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাজনীতিকরণ করতে চাইবে এবং সরকারের শাখা ও পরিষেবাগুলোর মধ্যে বিদ্যমান ভারসাম্যকে দুর্বল করবে।
Leave a Reply